সম্পাদকীয় [এপ্রিল – মে ২০১৫]

বর্ষ ১ | সংখ্যা ১

ব্যাপন-বন্ধুরা,

আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছো? বিশ্বকাপের আমেজে ব্যাপক মজায় থাকারই কথা। আর যখন তোমাদের উদ্দেশ্যে লিখতে বসেছি, ততক্ষণে বাংলাদেশ দল কোয়ার্টার ফাইনালে স্থান করে নিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তাই একটু বেশীই ফুরফুরে থাকার কথা। একবার ভাবোতো, এভাবে জিততে জিততে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ দল যদি বিশ্বকাপটাই জিতে নেয়, কী মজাই না হবে! টাইগারদের গর্জন শুনবে সারা বিশ্ব! ওহ, ভাবতেই ভাল লাগে।

ভাল জিনিসগুলো আসলেই ছড়িয়ে যাওয়া উচিত। সেটা হোকনা- আস্তে কি-বা জোরে। যেমন মনে কর তোমার গায়ে সুগন্ধী মেখে যখন বের হও, সেন্টটা যদি ভাল হয়ে থাকে, কি সেন্ট মেখেছো সেটার ব্যাপারে অনেকেই জিজ্ঞাসা করে। ছোট বেলায় চিন্তা করতাম, আমি সেন্ট গায়ে মাখলে অন্যরা এর সুগন্ধ অনুভব করে কেমনে। পরে জেনেছি, এটা ব্যাপন প্রক্রিয়ায় হয়ে থাকে। তথা এ ছড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ার নামই হচ্ছে ব্যাপন। বিজ্ঞানের প্রতি তোমাদের আগ্রহ আর ভালোবাসাকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতেই তাই আমরা হাজির হচ্ছি ‘ব্যাপন’ কিশোর বিজ্ঞান সাময়িকী নিয়ে। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যেকার বিজ্ঞান ভাবুকদেরকে লিখতে উদ্বুদ্ধ করা, বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে অভিজ্ঞদের নিকট থেকে জ্ঞান আহরনের সুযোগ করে দেয়া ও তাঁদের সাথে পরিচয় করে দেয়া, বিজ্ঞান মনস্ক করে গড়ে তোলা, বিজ্ঞানের প্রতি শিক্ষার্থীদেরকে আগ্রহী করে তোলা, বিজ্ঞানের বিষয়গুলোকে সহজভাবে তুলে ধরা প্রভৃতি লক্ষ্যকে ধারন করেই চলবে ব্যাপনের ব্যাপকতর বিচরণ।

শুনে খুশি হবে, তোমাদের প্রিয় ব্যাপনের কার্যক্রম শুধু ম্যাগাজিনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবেনা; বরং বিজ্ঞানের জন্য আরো বেশ কিছু উদ্যোগ হাতে নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে অনুষ্ঠিত জাতীয় বিজ্ঞান উৎসবে প্যাভিলিয়ন সহকারে হাজির হয়েছিলাম আমরা তোমাদের সঙ্গ পেতে। তোমাদের মধ্য থেকে সেখানে উপস্থিত হওয়া ব্যাপন-বন্ধুদের অকৃত্রিম ভালবাসা, বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস আর ভিড় জমানো উপস্থিতি আমাদেরকে ব্যাপকভাবে আন্দোলিত করেছে। সে অনুপ্রেরণা থেকেই কথা দিচ্ছি- অপেক্ষা কর, হয়ত তোমার স্কুল বা কলেজেও চলে আসতে পারি যেকোন সময়- হাতে ব্যাপনের ব্যাপক সব উপহার নিয়ে।

ব্যাপনকে তোমাদের মনের মত করে সাজানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি আমরা। আশা করছি, হাতে পেয়েই এর বন্ধু বনে যেতে হবে তোমাদেরকে। প্রতিটি বিভাগের মধ্যে তোমাদেরকে ডুব দিয়ে বিজ্ঞানের মজা আহরণের দাওয়াত দিয়ে রাখলাম। যারা ছোট বেলা থেকে মহাকাশে ঘুরতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখ কিন্তু এখনও যাওয়া হয়নি, তাদেরকে সেখানে যাওয়ার পরে কিভাবে বাস করতে হবে সে পন্থা শেখাবো এবার। গুগলে সার্স দিয়ে মূহুর্তে কাঙ্খিত রেজাল্ট পেয়ে অবাক বনে গিয়ে গুগলের ব্যাপারে জানার যে আগ্রহ তৈরি করেছো মনের মধ্যে, সেটাও মেটাব; কিন্তু শুধু ওদের ব্যাপারে জানলেই তো আর চলেনা, ভবিষ্যতে এরকম কিছু বানানোর সাধও তো তৈরি হওয়া চাই। আর সে সাধ মেটাতে যে প্রোগ্রামিং শেখা দরকার- সেটা কে শেখাবে? হুম, সে দায়িত্ব না হয় গোলাম সরওয়ার ভাইকেই দেয়া যাক। কী! তোমার ওগুলোর প্রতি আগ্রহ নেই! মানুষকে সুস্থ থাকতে সহযোগিতা করার মধ্যেই বেশী সুখ অনুভব কর? তাইলে তো মেডিক্যালে তোমাকে পড়াতেই হয়। তাহলে চলো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।

অন্যের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করছো, নিজে সুস্থ আছো তো? সেটা কিন্তু মেডিক্যালে না পড়েই বলতে পার। বিএমআই এর ব্যাপারে শিখে নিয়ে এখন থেকেই নাহয় একটু আধটু ভাব নিতে থাকলে, দোষের কি! বিজ্ঞানের মধ্যেও অনেক মজা আছে- এমন কথা শুনে বলবেনা তো আমরা তোমাদের সাথে রঙ্গ করছি! না, না। সত্যিই বলছি- বিজ্ঞানেও রঙ্গ আছে। খুঁজে নিও। মাথা খাটানোতে পটু হলে তোমার জন্য থাকল কুইজ। আর গোলমাল পাকিয়ে ফেলতে ফেলতে না গুলিয়ে ফেলার ব্যাপারে পটু হলে তোমার জন্য রইল প্যারাডক্স। ছু মন্তর ছু! যাদু নিয়ে হাজির হবে শাহিদ। শিখে নিও সব ঠিক ঠিক। আর বাকিসব নিজে নিজে পড়ে দেখে নাও, সব এখানে না বলে দেই…।

আমি, তুমি আর সে- সবাই মিলে যে আমরা, সে আমরা একসাথে বিজ্ঞানকে ব্যাপকভাবে ব্যাপনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে চলতে চলতে ব্যাপন-বন্ধু হওয়ার আশাবাদ ব্যাক্ত করে ও আল্লাহর সাহায্য চেয়ে আজ তাহলে রাখছি।