| জেবিন মাহমুদ |

চারিদিকে অন্ধকার নেমে আসা সতের শতকের কোনো এক রাতের কথা। গ্রামের একটি ছেলে ঘুড়ি ওড়ানোর চেষ্টা করছে। রাতের বেলা ঘুড়ি ওড়ানো?? শুনে নিশ্চয়ই অদ্ভুত লাগছে! অদ্ভুত লাগাটাই স্বাভাবিক। তবে ছেলেটিতো আর মিছে মিছে অন্ধকারে ঘুড়ি ওড়ানোর চেষ্টা করছিল না, একটা উদ্দেশ্যতো নিশ্চয়ই ছিল। কি ছিল সেই উদ্দেশ্য? ঘুড়ির গঠন শৈলী থেকেও তার কিছুটা আঁচ পাওয়া যায়। কাঠি-কাপড়ের তৈরি ঘুড়ি, তাতে ছেঁড়া কাপড়ের জোড়া লাগিয়ে বেশ বড়-সড় লেজ আর লেজের শেষ মাথায় একটা আলো সংযুক্তি।

ছেলেটি ভাবছে- এই ঘুড়ি আকাশে ওড়াতে পারলে অনেকেই ভাববে, এ বুঝি নূতন তারাই উঠেছে আকাশে। অনেকে আবার হয়তো ভাববে, এটা বুঝি পৃথিবী ধ্বংসেরই পূর্বলক্ষণ । এসব ভেবে ছেলেটির ঠোঁটে দুষ্ট হাসি খেলে গেল । কিন্তু কোনভাবেই সে ঘুড়িটিকে উড়াতে পারলোনা। বার বার ঘুরে ফিরে মাটিতে পরে যায়। ঘুড়ির লেজে লাগানো আলোর ভরে ঘুড়ি কি আর ওড়ে? ততক্ষণে কিভাবে যেন গ্রামের লোকজনের কানে এ কথা চলে যায় যে, তাদের বোকা বানানোর জন্য ছেলেটি অন্ধকারে ঘুড়ি উড়ানোর চেষ্টা করছে। সবাই শুনেতো একদম তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। ব্যাটা আমাদেরকে ভয় দেখাতে গিয়েছে, কেমন উচিত শিক্ষা হয়েছে। এগুলো ছেড়ে শিক্ষকের কথা মত স্কুলের পড়া করলেও তো হয়।

ছেলেটি বিলেতের স্কেলিংটনের একটি গ্রামের দ্বিতীয় শ্রেণীর লাস্ট বয় ছিল। শিক্ষকরাতো তাকে বলেই দিয়েছিল যে তার মাথায় গোবর ছাড়া কিছু নেই। এ নিয়ে বন্ধু মহলেও সে ঠাট্টা-তামাশার পাত্র হয়ে ওঠে। কিন্তু একদিন সেই ছেলেটিই হয়ে ওঠে কিনা বিশ্বখ্যাত একজন  বিজ্ঞানী। সারাবিশ্বের বিজ্ঞান মহলে সাড়া ফেলে একের পর এক সূত্র আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দেয় গোটা দুনিয়াকে। তাঁকে বিলেতের পার্লামেন্টের সদস্য করা হয়। বৃটেনের রাণী তাঁকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন। বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র রয়্যাল সোসাইটি তাঁকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।

১৬৪৩ সালের ৪ঠা জানুয়ারি (আধুনিক বর্ষপঞ্জি অনুসারে) বিলেতের লিংকনসায়ারের উলসথ্রোপে জন্ম নেয়া সেই ছেলেটি আর কেউ নন। তিনি হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন । কৃষক পিতার ঘরে তাঁর জন্ম। জন্মের তিন মাস আগেই তাঁর পিতা মারা যায়। জন্মের সময় নিউটনের আকার-আকৃতি ছিল খুবই ছোট। তার মা হানাহ এইসকফ প্রায়ই বলতেন ছোট্টবেলার সেই নিউটনকে অনায়াসে একটি কোয়ার্ট মগের ভিতর ঢুকিয়ে দেয়া যেতো। জন্মের তিন মাস বাদে তাঁর মা আবার বিয়ে করেন। নিউটনের লেখা থেকে বোঝা যায়, সৎ পিতাকে তাঁর পছন্দ ছিলনা। এজন্য মায়ের প্রতি তাঁর কিছুটা ক্ষোভও ছিল। নিউটন পরবর্তীতে তার নানীর কাছে ছিল। স্কুল জীবন গ্রামেই কাটে তাঁর। পড়াশোনার চেয়ে সূর্যঘড়ি, জলঘড়ি, ঘুড়ি বানানো, বিভিন্ন কলকব্জা নাড়াচাড়া নিয়েই তাঁর আগ্রহ ছিল বেশি। যখন তাঁর বয়স বারো তখন তাঁকে গ্রান্থামের গ্রামার স্কুলে পাঠানো হয় এবং সেখানে তিনি এক ঔষধ প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতার বাড়িতে ছিলেন। গ্রান্থামের ঐ স্কুলে নিউটন পড়াশোনায় ধীরে ধীরে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে এবং স্কুলের শিক্ষকরা তাঁর প্রতিভার জন্য তাঁকে খুব পছন্দ করতেন। স্কুলের অধ্যক্ষের শ্যালক প্রায়ই দেরিতে স্কুলে আসতো।  নিউটন একদিন বললো- স্যার আপনাকে একটা ঘড়ি বানিয়ে দিচ্ছি, আপনি ঘড়ি দেখে ঠিক সময়ে স্কুলে আসতে পারবেন। তিনি ঘড়ি তৈরি করলেন। ঘড়ির উপরে ছিল একটা পানির পাত্র যেটাতে দৈনিক নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি ঢালতে হত। পাত্র থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি ঘড়ির কাঁটাতে পড়তো আর ঘড়ির কাঁটা চলতে থাকত।

নিউটনের বয়স তখন ষোল। বিলেতে প্রচন্ড ঝড় শুরু হয়, এমন ঝড় বিলেতের ইতিহাসে খুব কমই হয়েছে। নিউটনের সখ ছিল হাওয়ার বেগ মাপা। তখন তীব্র বেগে বাতাস বইছিল। নিউটন এসময় ফাঁকা মাঠে গিয়ে বাতাসের দিকে এক লাফ দিল। যেখানে পা পড়ল সেখানে এক দাগ দিল। আবার বাতাসের বিপরীতে আরেক লাফ দিয়ে মাটিতে চিহ্ন দিল । গ্রামের লোকজনতো ঝড়ের মধ্যে তাঁর এসব দেখে পাগলই ভেবেছিল।
1

তাঁর আত্মীয়স্বজন ভাবতো কৃষকের ছেলে হয়তো কৃষকই হবে। কিন্তু নিউটনের ঝোঁক ছিল বিভিন্ন বিজ্ঞানের বই সংগ্রহ করে পড়া ও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করার উপর। একবার কিছু জিনিস বিক্রির জন্য তাঁকে বাজারে পাঠানো হল। কিন্তু নিউটন নিজে না গিয়ে অন্য আরেকজনকে বিক্রির জন্য পাঠিয়ে দিলো। আর নিজে নির্জনে এক গাছের নিচে অংক নিয়ে মশগুল হয়ে থাকল। এদিকে ততক্ষণে নিউটনকে খোঁজাখোঁজি শুরু হয়ে গেছে। বাড়িতে তো রীতিমতো হুলুস্থুল কান্ড, কই গেল নিউটন। অনেক খোঁজাখোঁজির পর তাঁর এক চাচা তাঁকে খুঁজে বের করলো। এমন অদ্ভুত ছেলেকে নিয়ে কি করা যায়? তাঁর চাচা তাঁকে কলেজে পাঠিয়ে দিতে বললেন, যত খুশি অংক করুক সেখানে গিয়ে। তাঁকে কেমব্রিজে পাঠানো হলো। এরপর যা ঘটল, তা ছিল এককথায় যুগান্তকারী।

নিউটন তখন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ১৬৬৫ সালের দিকে প্লেগ মহামারী আকারে দেখা দিলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ সময় নিউটন তাঁর গ্রামের বাড়ি উলসথ্রোপে চলে যায়। আর এখানেই নিউটনের মাথায় প্রথম মহাকর্ষের ধারণাটি আসে। নিউটনের মাথায় আপেল পড়েই নাকি মহাকর্ষ তত্ত্ব সমন্ধে তাঁর বোধোদয় ঘটে এমন ঘটনা সবারই জানা। যদিও এটার কোনো ঐতিহাসিক সত্যতা নেই।এমনকি নিউটনের প্রথম জীবনীকার ডেভিড ব্রিউস্টারের গ্রন্থে আপেল সংক্রান্ত কোনো কাহিনী ছিলনা। মহাকর্ষ সূত্র আবিষ্কারের পর সকলের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এটি। কিভাবে নিউটনের মাথায় এ সূত্র সমন্ধে ধারণা এলো! আর নিউটন হয়তো সকলের আগ্রহের কথা মাথায় রেখেই ‘আপেল তত্ত্বের’ অবতারণা করেছিলেন। ইতিহাসবিদ রিচার্ড এস. ওয়েস্টফলতো বলেই দিয়েছেন এটা একবারে ‘ভালগার মিথ’। কিন্তু সত্যি-মিথ্যে সে যাই হোক মানুষ এটাকে সাদরেই গ্রহন করলো!

প্লেগের আঠারো মাস বন্ধে শুধু মহাকর্ষই নয়, তিনি আরও অনেক কিছু নিয়ে গবেষণা করেন। এ সময়ে তিনি প্রিজমের ভিতর দিয়ে আলোর বিচ্ছুরণ বিষয়ক বিভিন্ন পরীক্ষা করেন। নানা জটিল বিষয় আবিষ্কার করেন- বাইনমিয়াল থিউরেম (Binomial theorem), কঠিন পদার্থের ঘনত্ব (The method for calculating the area for curves or volume of solids), ফ্লাক্সসন (Fluxions) যা বর্তমানে ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাস নামে পরিচিত। এ সময় তিনি আলো নিয়ে নানা চমকপ্রদ পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেন। প্লেগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ না থাকলে  নিউটন হয়তো এত কিছু নিয়ে গভীর ভাবে ভাবনা- চিন্তা করার সময় পেতেন না, ফলে দুনিয়াবাসীও বঞ্চিত হত তাঁর অসাধারণ কেরামতি থেকে ।

১৬৬৭ সাল। প্লেগের প্রকোপ তখন অনেকাংশে কমে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে নিউটন আবার পড়াশোনার জন্য কেমব্রিজে চলে আসেন। নিউটন মাস্টার্স পাস করে স্নাতকোত্তর বৃত্তিও পেয়েছিল এবং গবেষণাকালে তিনি লুকাসিয়ান অধ্যাপক আইজ্যাক ব্যারোর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হন। পরবর্তীতে ১৬৬৯ সালে আইজ্যাক ব্যারো অবসর নিলে নিউটন কেমব্রিজে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে লুকাসিয়ান অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। যখন কিনা তাঁর বয়স ছিল মাত্র সাতাশ বছর। এত কম বয়সে লুকাসিয়ান অধ্যাপক হওয়া ছিল একটা দুর্লভ সম্মাননা।

প্রায় বিশ বছর আগে আবিষ্কৃত মহাকর্ষ তত্ত্বটি নিউটন ১৬৮৭ সালে জন সম্মুখে প্রকাশ করেন তাঁর লেখা ‘প্রিন্সিপিয়া’ বইয়ের মাধ্যমে। কিন্তু নিউটন কেন তাঁর আবিষ্কারের কাহিনী এতদিন জনসমক্ষে আনেননি সেটা রহস্যই ছিল বটে। তাঁর বন্ধু হ্যালির সাথে গ্রহ নক্ষত্রের চলাচল ব্যাখ্যা করতে গিয়েই নিউটন প্রথম তাঁর আবিষ্কৃত মহাকর্ষ তত্ত্বের কথা তুলে ধরেন। পরবর্তীতে হ্যালির উপর্যুপরি অনুরোধের প্রেক্ষিতেই হয়তো নিউটন পদার্থ বিদ্যার ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী ও সুদূরপ্রসারী গ্রন্থটিতে তাঁর আবিষ্কৃত স্থান-কাল ও মহাকর্ষ সমন্ধে তাঁর চিন্তা-ভাবনার কথা তুলে ধরেন। ইংরেজিতে গ্রন্থটির নাম ‘The Mathematical Principles of Natural Philosophy’ বা সংক্ষেপে ‘Principia’। গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ল্যাটিন ভাষায় ১৬৮৭ সালের ৫ জুলাই । ল্যাটিন ভাষায় যেটির শিরোনাম ছিল -‘Philosophiae Naturalis Principia Mathematica’।

2

এই গ্রন্থটি উম্মোচনের মধ্য দিয়েই পুরনো ধ্যান-ধারণা ছেড়ে নতুন আঙ্গিকে মহাবিশ্বেকে দেখা শুরু হল এবং একইসাথে পদার্থ বিজ্ঞানও একটি শক্ত অবস্থান পেল । নিউটনের ‘PRINCIPIA’ গ্রন্থটির শুরুতেই রয়েছে মূলত আধুনিক বলবিদ্যার তিনটি নিয়ম । এই নিয়মগুলিই আমাদের কাছে নিউটনের গতিসুত্র নামে পরিচিত।গ্রন্থটির দ্বিতীয় খন্ডে তিনি গ্যাস, ফ্লুইড বস্তুর গতি নিয়ে আলোচনা করেন। গ্যাসকে স্থিতিস্থাপক অনুর সমষ্টি ধরে বয়েলের সূত্র প্রমাণ করেন। তিনি গ্যাসের উপর বায়ুর চাপ পরিমাপ করতে গিয়ে পরোক্ষভাবে শব্দ তরঙ্গের বেগ নির্ণয় করেন। যদিও তাঁর এ তত্ত্বে কিছুটা ত্রুটি ছিল। গ্রন্থটির তৃতীয় অংশে তাঁর বিখ্যাত ‘Inverse Law of Gravitation’ নিয়ে আলোচনা করা হয়। তাঁর এই সূত্রের মাধ্যমেই আকাশের গ্রহ-নক্ষত্র, চন্দ্র-সূর্যের গতি-প্রকৃতি ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে পৃথিবীর ওপর অন্যান্য বস্তুর গতিবিধি। এ তত্ত্বই আমাদের শিখিয়েছে মিসাইল ছোড়ার নিয়ম-কানুন আর রকেট উৎক্ষেপনের মূলমন্ত্র। নিউটনের আগে কেউ এমনভাবে গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি সমন্ধে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
নিউটনের প্রদান করা তত্ত্বগুলো আমাদের পুরনো চিন্তা-ধারাগুলোকে গুঁড়িয়ে দিয়ে পরিচিত করেছে তাঁর দেখা বিশ্ব জগতের সাথে। শুধু তাই নয় তিনি ‘মহাকর্ষীয় বিশ্বতত্ত্বের’ ( Gravitational cosmology) একটি সুস্থির কাঠামোও দাঁড় করিয়েছেন। যা থেকে বোঝা যায় তাঁর সৃজনশীলতা, পর্যবেক্ষণ দক্ষতা ও চিন্তা শক্তির নিঁখুত সমন্বয়।

নিউটনের কাজগুলোই আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের ভিত্তি হয়ে রয়েছে। বিজ্ঞানের আলোকবর্তিকা হাতে গোটা দুনিয়াকে যে ক’জন মানুষ পথ দেখিয়েছেন, নিউটন তাদের মধ্যে অন্যতম। নিউটন ছিলেন গাণিতিক ও তত্ত্বীয় পদার্থবিদের মধ্যে অগ্রগামী পুরুষ এবং একই সাথে তিনি পরীক্ষণ পদার্থবিদেরও শ্রেষ্ঠতম উদাহরণ । অষ্টদশ শতকের কবি আলেকজান্ডার পোপ নিউটনের প্রতি মুগ্ধ হয়ে তাঁর কবিতায় তুলে ধরেন :
“Nature and Nature’s laws lay hid in night :
God said, Let Newton be! And all was light! “

১৭২৭ সাল, নিউটন অসুস্থ হয়ে পড়লেন। চিকিৎসার পরেও তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটেনা। অবশেষে ২০শে মার্চ এই মহাবিজ্ঞানীর জীবনাবসান ঘটে। এই বিশ্বপ্রকৃতি থেকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে যায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী। কিন্তু তিনি নিজেকে কখনো মহাপন্ডিত ভাবেননি। মৃত্যুর কিছুদিন আগে তিনি নিজের সমন্ধে লিখেছিলেন :
“পৃথিবীর মানুষ কি ভাবে আমাকে জানিনা। কিন্তু নিজের সমন্ধে আমি মনে করি, আমি একটি ছোট ছেলের মত সমুদ্রের তীরে খেলা করছি আর খুঁজে ফিরছি সাধারণের চেয়ে সামান্য আলাদা পাথরের নুড়ি বা শামুকের খোলস। সামনে আমার পরে রয়েছে অনাবিষ্কৃত বিশাল জ্ঞানের সমুদ্র।”