।মাহমুদুল হাসান জাবির।

১. গ্রেগর ইয়োহান মেন্ডেল

২০ জুলাই ১৮২২। এদিন জার্মানি বিজ্ঞানী গ্রেগর ইয়োহান মেন্ডেল জন্মগ্রহণ করেন, যাকে বলা হয় ‘ফাদার অব মর্ডান জেনেটিক্স’। শৈশবে তিনি উদ্যানপালক হিসেবে কাজ করতেন। অতঃপর তিনি ১৮৪০ সালে ওলোমোউৎস শহরে অবস্থিত ফিলোসফিক্যাল ইন্সটিটিউটে অধ্যয়ন শুরু করেন।

১৮৪৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক ফ্রিডরিখ ফ্রাঞ্জের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি সেখান থেকে পড়াশুনা শেষ করে ব্রুনের সেন্ট টমাস মঠে যোগদান করেন। সন্ন্যাসী জীবনের প্রারম্ভে তিনি তার নামের পূর্বে গ্রেগর অংশটি যুক্ত করেন।

অতঃপর, ১৮৫১ সালে তিনি ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন এবং ১৮৫৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে মঠে প্রত্যাবর্তন করেন। এরপর তিনি মঠের বাগানে মটরশুঁটির উপর গবেষণা শুরু করেন। ১৮৫৬ সাল থেকে শুরু করে ১৮৬৩ সাল পর্যন্ত তিনি প্রায় ২৯ হাজার মটরশুঁটি চাষ ও পরীক্ষা করেন।

তার এই গবেষণা দুটি সাধারণীকরণের সূচনা ঘটায়। প্রথমটি হলো- পৃথকীকরণ সূত্র এবং দ্বিতীয়টি হলো- স্বাধীনভাবে সঞ্চারণ সূত্র। এই দুটি সূত্রই পরবর্তীতে মেন্ডেলের বংশগতির সূত্র নামে পরিচিতি লাভ করে। এর কারণে মেন্ডেলকে ‘ফাদার অব মর্ডান জেনেটিক্স’ বলা হয়। তিনি ৬ই জানুয়ারি ১৮৮৪ সালে ক্রনিক নেফ্রাইটিসে ভুগে মারা যান।

চিত্র-১: গ্রেগর ইয়োহান মেন্ডেল

২. জন ডাল্টন

২৭ই জুলাই ১৯৪৪ সাল। এদিন ইংরেজ রসায়নবিদ জন ডাল্টন মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ইংল্যান্ডের ঈগলসফিল্ড নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি তার বড় ভাই জনাথনের সাথে কেন্দালে অবস্থিত এক বিদ্যালয় পরিচালনার কাজে নিয়োজিত হন।

অতঃপর, ১৭৯৩ সালে তিনি ম্যানচেস্টারে চলে যান এবং সেখানে এক অন্ধ দার্শনিকের কাছ থেকে বিজ্ঞান সংক্রান্ত সকল জ্ঞান অর্জন করেন। তারপর তিনি গণিত এবং দর্শনের শিক্ষক হিসেবে ‘নিউ কলেজ’-এ কাজ শুরু করেন।

তিনি একাধারে রসায়নবিদ, আবহাওয়াবিজ্ঞানী এবং পদার্থবিদ ছিলেন। বিজ্ঞানে তার অবদানের কথা বলতে গেলে তার ‘পরমাণু তত্ত্ব’-টিই বলা যায়– যা তোমরা ছোটবেলা থেকেই পড়েছো। এছাড়াও তিনি বর্ণান্ধতা বিষয়ে কাজ করার কারণে খ্যাতি লাভ করেন।

১৮৩৭ সালে জন ডাল্টনের একটি মাইনর স্ট্রোক হয়। ১৮৩৮ সালে তিনি আবারও স্ট্রোক করেন এবং বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। ১৯৪৪ সালের মে মাসে তিনি আবারও স্ট্রোক করেন এবং দু’মাস পরই ২৬শে জুলাই তার হাত কাঁপতে থাকে। অতঃপর পরদিনই ২৭ তারিখ তিনি তার বিছানা থেকে পড়ে যান এবং মারা যান।

চিত্র-২ : জন ডাল্টন

৩. আর্নেস্ট রাদারফোর্ড

৩০শে আগস্ট ১৮৭১ সাল। এদিন আর্নেস্ট রাদারফোর্ড নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। ওনাকে বলা হয় ‘ফাদার অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স’। শৈশবে তিনি হ্যাভলক স্কুলে অধ্যয়ন করেন। পরে তিনি নেলসন কলেজে অধ্যয়ন করেন এবং বৃত্তি লাভ করে ইউনিভার্সিটি অব নিউজিল্যান্ডের ক্যানটারবারি কলেজে অধ্যয়ন করেন।

তিনি রেডিও ওয়েভ ডিটেক্টর আবিষ্কার করেন। তিনি থোরিয়াম ও ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা থেকে দুটি ভিন্ন তেজস্ক্রিয়তার বর্ণনা দেন এবং তাদের নাম দেন আলফা ও বিটা। তিনিই সর্বপ্রথম নিউক্লিয়াসে নিউট্রন ও প্রোটনের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন এবং ইলেকট্রনের বৃত্তাকার পথে ঘুরার বিষয়টিও আবিষ্কার করেন।

এটি রাদারফোর্ড পরমাণু মডেল বা সৌর-মডেল হিসেবে পরিচিতি পায়। পরবর্তীতে তা বোর পরমাণু মডেল নির্মাণে সহায়ক হয়। আর্নেস্ট রাদারফোর্ড ১৯৩৭ সালের ১৯শে অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন এবং স্যার আইজ্যাক নিউটনের সমাধির অদূরে সমাধিস্থ হন।

চিত্র-৩ : আর্নেস্ট রাদারফোর্ড

৪. অ্যাপোলো ১১ মিশন

অ্যাপোলো হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাসা পরিচালিত একাধিক অভিযান প্রকল্পের নাম। মার্কিন রাষ্ট্রপতি জন এফ. কেনেডির পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৬১ সালের ২৫শে মে থেকে এই অভিযানের শুরু হয়। এই প্রকল্প সর্বমোট ৫টি অভিযান পরিচালনা করে।

এর মধ্যে অ্যাপোলো ১১ প্রথম মনুষ্যবাহী মহাকাশ অভিযান– যা চাঁদে অবতরণ করে। এই অভিযান অ্যাপোলো প্রোগ্রামের ৫ম মহাকাশ অভিযাত্রা। ১৯৬৯ সালের ১৬ই জুলাই এই অভিযানের সূচনা হয়। আর ২১শে জুলাই ২:৫৬-তে সফলভাবে নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে পা রাখেন। তার ২০ মিনিট পর এডউইন ইউগিন বাজ অলড্রিন চাঁদে পা রাখেন।

নীল আর্মস্ট্রং দলপতি হিসেবে, এডউইন অলড্রিন চান্দ্র অবতরণযানের চালক হিসেবে এবং মাইকেল কলিন্স কমান্ড মডিউল চালক হিসেবে অভিযান পরিচালনা করেন।

৫. পজিট্রন

পজিট্রন হলো ইলেক্ট্রনের প্রতিকণা। বিজ্ঞানী ডেভিড অ্যান্ডারসন ১৯৩২ সালের ২রা আগস্ট এটি আবিষ্কার করেন। এরও চার বছর আগে ১৯২৮ সালে তিনি বলেছিলেন যে, ইলেক্ট্রনের চার্জ ধনাত্মক ও ঋণাত্মক দুটোই হতে পারে।

আর ধনাত্মক চার্জধারী এই ইলেক্ট্রনের নাম তিনি পজিট্রন দেন বা একে অ্যান্টি-ইলেক্ট্রনও বলা হয়। এর ভর আর ইলেক্ট্রনের ভর একই। পজিট্রন প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম উভয়ভাবেই উৎপন্ন হতে পারে। এটি মূলত তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের ফলে উৎপন্ন হয়। আবার একটি প্রোটনকে ভাঙলে একটি পজিট্রন এবং একটি নিউট্রন পাওয়া যায়।

তোমরা শুনে অবাক হবে যে, আমাদের শরীর থেকেও পজিট্রন উৎপন্ন হয়। আমাদের শরীরে পটাসিয়ামের আইসোটোপ পটাসিয়াম-৪০ থেকে এই কণা উৎপন্ন হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ থেকে প্রতিদিন প্রায় চার হাজার পজিট্রন উৎপন্ন হয়।

চিত্র-৪ : ইলেক্ট্রন (বামে) ও পজিট্রন (ডানে)

তোমরা নিশ্চিয়ই জানো যে, কলায় পটাসিয়াম রয়েছে। আর এই কণা কলাতেও পাওয়া যায়।

৬. MD5 ফাংশন

MD5 এই অদ্যাক্ষরের পূর্ণরুপ হচ্ছে Message-digest Algorithm। ২০০৪ সালের ১৭ই আগস্ট চীনা গবেষকরা এই ফাংশনে ত্রুটি লক্ষ করেন। এটি এনক্রিপশনের একটি পন্থা। এনক্রিপশন হচ্ছে কোনো ডাটা বা তথ্যকে এলগোরিদমের মাধ্যমে দুর্বোধ্য করে আদান-প্রদান করা– যাতে হ্যাকার বা অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি বুঝতে না পারে।

চিত্র-৫ : রোনাল্ড রিভেস্ট, অ্যালগোরিদমটির উদ্ভাবক

সাধারণত ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি তথ্য এনক্রিপ্ট করা হয়। আর প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে ডাটাকে এনক্রিপ্ট করার জন্য বিল্ড-আপ ফাংশন থাকে। তার মধ্যে একটি ফাংশন হলো MD5। যেমন ওয়েবসাইট তৈরির জন্য জনপ্রিয় ল্যাঙ্গুয়েজ PHP দিয়ে যদি ‘Byapon’ শব্দটাকে এনক্রিপ্ট করি, তাহলে নিম্নের কোডটুকু লিখা যায়-

<?php

$encription = md5(‘byapon’);

echo $encription;

?>

তোমরা কোড করা এই byapon শব্দের এনক্রিপ্টেড রেজাল্ট পাবে নিম্নের লিখাটি-

b972897e08b3d689ab063256c099a8cc

দেখলে তো, কিছুই বুঝতে পারছো না। এটাই হচ্ছে MD5-এর কাজ। এছাড়াও ডাটা এনক্রিপ্ট করার জন্য SHA-1, SHA-2, SHA-224, SHA-256, SHA-384, SHA-512, MD2, MD4, MD6 ইত্যাদি ফাংশন ব্যবহার করা হয়।

জুলাই-আগস্ট ২০১৯। বর্ষ ৫। সংখ্যা ২

চিনে রাখি অসুখগুলি

মহাবিশ্বের আকৃতি

মেসোপোটেমীয় বিজ্ঞান

তোমাদের প্রশ্ন আমাদের উত্তর

চিনে রেখো ওষুধগুলি

নক্ষত্রের দূরত্ব নির্ণয় 

জেনেটিক্সের আদ্যোপান্ত

ভিপিএন  কী এবং কেন?  

চিনে রাখি অসুখগুলি

অগ্নি নির্বাপণের কথকতা

অগ্নি নির্বাপণের কথকতা

চারদিকে বিজ্ঞান

টিআইসিআই

পৃথিবী কেন্দ্রের বয়স

ইলেকট্রোপ্লেটিং থেকে ওয়াটার হিটার

পার্কার সোলার প্রোব : সূর্যকে ছোঁয়ার মহাকাব্যিক অভিযান

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে চাঁদ

চন্দ্রাভিযান  (পর্ব-১)

পানির অপর নাম তরমুজ!

ব্ল্যাক হোলের প্রথম ছবি

অ্যাপেন্ডিক্স কি আসলেই অপ্রয়োজনীয়!

বিটকয়েনের দৌরাত্ন্য

রেডিয়েশন : অসাধারণ ত্যাগের আবিষ্কার

আবরার নাফির ফিজিক্সে রৌপ্য জয়ের গল্প

চুম্বকত্বের আদ্যোপান্ত

চিনে রাখি অসুখগুলি

দুরন্ত বাড়ন্ত e