পরিচিতি
ফাহাদ মুনতাসির
৪ মে ২০১৫৬ মিনিট
প্রতিষ্ঠাকালঃ ১৯৪৬ সাল
প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীঃ সাড়ে তিন হাজার
ছাত্র-ছাত্রীঃ ১০৫০ জন
ওয়েবসাইটঃ www.dmc.com.bd
প্রিন্সিপালঃ অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মদ
১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের শীর্ষস্থানীয় মেডিকেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল বায়ান্নোর স্মৃতি ধারণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে সামনে রেখে দাঁড়িয়ে আছে সদর্পে। এর পাশেই রয়েছে দেশের অপর দুটি শীর্ষ বিদ্যাপীঠ- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এতে ৫ বছর মেয়াদী এমবিবিবিএস কোর্স ছাড়াও রয়েছে স্নাতকোত্তর পর্যায়েও বিভিন্ন কোর্স। পাশাপাশি চলে সরকারী চিকিৎসা সেবা। দেশের প্রথম বার্ন ইউনিট এ হাসপাতালেই অবস্থিত।
কলেজের মূল ভবন নির্মিত হয় ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের আগেই। তখন ভবনটি পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের প্রধান সচিবালয় হিসেবে ব্যবহৃত হত। পরবর্তীতে ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে, এই ভবনের এক অংশে ঐ প্রতিষ্ঠানের মেডিকেল সেন্টার স্থাপিত হয়। বাকি অংশে ছাত্রাবাস ও কলা অনুষদের প্রশাসনিক দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ১৯৩৯ সালে ঢাকা ইউনিভার্সিটি কাউন্সিল ব্রিটিশ সরকারের কাছে একটি পৃথক মেডিকেল কলেজের দাবী জানালে ২য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় প্রকল্পটি স্থগিত হয়ে যায়।
পরবর্তীতে ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কলেজটি। ক্লাস শুরু হয় ১০ জুলাই তারিখে। এই দিনটিকে তাই ডিএমসি দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১ম বর্ষের ছাত্রদের ডাকা হয় k-5 নামে। এভাবে ক্রমান্বয়ে ৪র্থ ও ৫ম বর্ষের ছাত্রদের যথাক্রমে k-2 ও k-1 নামে ডাকা হয়। শুরুতে বিভাগ ছিল মাত্র চারটি- মেডিসিন, সার্জারি, গাইনোকলজি ও otolaryngology। প্রতিষ্ঠানটির প্রথম প্রিন্সিপাল ছিলেন মেজর ডব্লিউ জে ভারজিন।
প্রতি বছর প্রায় ৭০ হাজার উচ্চমাধ্যমিক পাস করা ছাত্র-ছাত্রী বহু আরাধ্য এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবার জন্যে অবর্তীর্ণ হয় ভর্তি পরীক্ষায়। তবে প্রতি বছরই বাড়ছে প্রতিযোগীর সংখ্যা। ভর্তির সুযোগ পান মাত্র ২০০ জন কৃতি ছাত্র-ছাত্রী। অংশগ্রহণের যোগ্যতা : এসএসসি এবং এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে মোট জি পি এ ৮.০ পেতে হবে। তবে এসএসসি এবং এইচএসসিতে জি.পি.এ পৃথকভাবে ন্যূনতম ৩.৫০ হতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টন
*মোট নাম্বার = ২০০
* পরীক্ষার ফলাফল থেকে স্কোর যোগ হবে=১০০ নাম্বার
এসএসসি জিপিএ ৫.00 × ৮= ৪০
এইচএসসি জিপিএ ৫ × ১২ = ৬০
*MCQ পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষা ১০০ নাম্বার
জীববিজ্ঞান-৩০, রসায়ন বিজ্ঞান-২৫, পদার্থ বিজ্ঞান-২০, ইংরেজি-১৫, সাধারণ জ্ঞান-১০। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১ নম্বর, প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে ০.২৫ নম্বর। পরীক্ষার সময় : ৬০ মিনিট অর্থাৎ প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের জন্য সময় পাওয়া যাবে ০.৬ মিনিট মাত্র। উল্লেখ্য, দেশের সবগুলো মেডিকেলের একই সাথে ভর্তি পরীক্ষা হয় বিধায় তথ্যগুলো সব মেডিকেল কলেজের জন্যেই প্রযোজ্য। বিগত বছরের কিছু উপাত্ত এখানে সংযোজন করা হলঃ
তিনটি পেশাগত পরীক্ষার বাধা পেরিয়ে একজন শিক্ষার্থী ডাক্তার হবার যোগ্যতা অর্জন করে এবং এরপর একবছর ইণ্টার্নশিপ করতে হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বর্তমানে এখানে বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স (এমডি ও এমএস) চালু করা হয়েছে।
কলেজের নিজস্ব ছাত্রাবাস স্থাপনের আগে মুসলমান ছাত্ররা সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে,হিন্দু ছাত্ররা ঢাকা হলে (বর্তমানে জগন্নাথ হল)এবং খ্রিস্টান ছাত্ররা সদরঘাটের ব্যাপ্টিস্ট মিশনে থাকত। আর ছাত্রীরা থাকত নার্সিং হোস্টেলে। ১৯৪৭ সালে বর্তমান নার্সিং ইনস্টিটিউটের স্থানে নিজস্ব ছাত্রী হোস্টেল স্থাপিত হয়। প্রথমে ১১টি, পরে আরো দুই দফায় ৬টি ও ৩টি মোট ২০টি ব্যারাক নির্মিত হয়। বর্তমানে যে ছাত্রী হলটি ‘ডাঃ মিলন হল’ নামে পরিচিত, ১৯৯২ সালের পূর্বে সেটি ডাঃ আলীম চৌধুরী হলেরই অংশ ছিল। এ হলে রয়েছে মোট ১১৬টি রুম। বকশীবাজার মোড়ে ছাত্রদের জন্য বর্তমান হলটি নির্মিত হয় ১৯৫০ থেকে ১৯৫৫ সালে। ১৯৭২ সালে এর নামকরণ করা হয় ‘শহীদ ডাঃ ফজলে রাব্বি হল’। এই হলে একটি মূল ভবন ও ৩ টি ব্লকসহ মোট রুম এর সংখ্যা ২২৫ যা MBBS প্রথম বর্ষ থেকে পঞ্চম বর্ষ পর্যন্ত ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত।
১৯৭৪-৭৫ সালে ইন্টার্নি ডাক্তারদের জন্য শহীদ ডাঃ ফজলে রাব্বি হলের পাশে পৃথক হোস্টেল প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে এর নামকরণ করা হয় ‘শহীদ ডাঃ মিলন ইন্টার্নি হোস্টেল’। এর পূর্বে ইন্টার্নি ডাক্তাররা চাঁনখারপুলের কাছে ওল্ড পিজি হোস্টেলে থাকত।