।রাফে সালমান রিফাত।

লেখক : শিক্ষার্থী, ফার্মাসি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ব্যাপনের নিয়মিত বিভাগ চিনে রাখো অসুখগুলি। অসুখ হলে ওষুধও খেতে হবে। অবশ্য খেতে বুঝে শুনে। কোন ওষুধের কী লাভ, কী ক্ষতি তা জেনে রাখলে মন্দ হয় না। তবে চূড়ান্তভাবে ওষুধ খাবার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবে।
– সহকারি সম্পাদক

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ড্রাগ বা ওষুধ খুবই পরিচিত একটি জিনিস। জীবনে কখনই ওষুধ খাওয়া লাগেনি এমন মানুষ খুব একটা পাওয়া যাবে না। রোগ যেখানে আছে সেখানে ওষুধের থাকাটাও অবিচ্ছেদ্য ব্যাপার। ধারাবাহিক এই বিভাগটিতে আমরা আমাদের পরিচিত বা অপরিচিত ওষুধ সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করবো।

প্রতি সংখ্যায় দুটি করে ওষুধের বৈজ্ঞানিক বিবরণ থাকবে আশা করছি। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে সেই ওষুধের জেনেরিক বা রাসায়নিক নাম, আমাদের দেশে প্রচলিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নাম, ওষুধের থেরাপিউটিক ব্যবহার, কীভাবে তা শরীরে কাজ করে, ওষুধের ডোজ সম্পর্কে ধারণা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি।

ড্রাগকে আমরা বাজারে যেভাবে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত অবস্থায় পাই তাকে মেডিসিন অথবা ড্রাগের ডোজেস ফর্ম (ডোজ গ্রহণের অবস্থা) বলা যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ডোজেস ফর্ম আছে। যেমন : ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, সিরাপ, সাসপেনশন, ইমালশন, সাপোজিটরি ইত্যাদি।

ওষুধকে বিভিন্নভাবে শ্রেণিবিন্যাস করা যায়। এর মধ্যে রোগীর প্রাপ্যতার ভিত্তিতে ড্রাগ বা ওষুধ দুই ভাগে বিভক্ত–

১। প্রেসক্রিপশন ড্রাগ বা ঔষধ : নিবন্ধিত ডাক্তার বা চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া যে ওষুধ কিনতে পাওয়া যায় না। যেমন : অ্যান্টিবায়োটিক, বেনজোডায়াজেপিন ইত্যাদি।

২। ওভার দ্যা কাউন্টার ড্রাগ (ওটিসি ড্রাগ) : প্রেসক্রিপশন ছাড়াই যে ড্রাগ কিনতে পাওয়া যায়। যেমন : প্যারাসিটামল, অ্যাসপিরিন ইত্যাদি।

এই সংখ্যায় আমরা প্যারাসিটামল এবং অ্যাসপিরিন– এ দুটি ওষুধ নিয়ে জানবো।

চিত্র-১ : প্যারাসিটামল

প্যারাসিটামল :

  • জেনেরিক/রাসায়নিক নাম– প্যারাসিটামল বা অ্যাসিটামিনোফেন। 
  • ব্র্যান্ড নাম– নাপা, এইস, রিসেট, অ্যাসিটা, অ্যাসিটোফেন, অ্যাক্ট, এটিপি, এ–২, অ্যাসমল, অ্যাসটা, অ্যাটপেন, সেন্টামল, সিটাডল, সেটাল ইত্যাদি। 
  • ডোজ– প্যারাসিটামল সাধারণত ৫০০ মি.গ্রা.-এর ট্যাবলেট হিসেবে বেশি ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও ৬৫ মি.গ্রা. ক্যাফেইনসহ কম্বিনেশন ড্রাগ অথবা এক্সটেন্ডেড ডোজ হিসেবে ৬৫০ মি.গ্রা.-এর ট্যাবলেট বাজারে পাওয়া যায়। 
  • ব্যবহার– জ্বর, হালকা থেকে সহনীয় পর্যায়ের ব্যথা, হাড়ের ব্যথা, মাথাব্যথা, মাইগ্রেইন, দাঁতের ব্যথা, অপারেশনের পর সহনীয় মাত্রার ব্যথা ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 
  • যেভাবে কাজ করে– প্যারাসিটামল ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। ব্যথার ইমপালস/প্রবাহ উৎপন্ন হওয়াকে প্রান্তীয় পর্যায়ে ব্লক করে দেয়। এটি জ্বরের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসে যে তাপ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র আছে তার কার্যকারিতায় বাধা দেয়। আবার ব্যথার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রোস্টাগ্লান্ডিন নামক হরমোন উৎপাদনে বাধা দেয়। 
  • সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া– থ্রম্বোসাইটোপিনিয়া, লিউকোপিনিয়া, নিউট্রোপিনিয়া।

চিত্র-২ : অ্যাসপিরিন

অ্যাসপিরিন :

  • জেনেরিক/রাসায়নিক নাম– অ্যাসপিরিন 
  • ব্র্যান্ড নাম– অ্যানজিন, অ্যাসোরিন, অ্যাসপিন, অ্যাসপিরিন ৭৫, ব্লিস ৭৫, কেইড, কারভা, ডিসপ্রিন, ইকোসপ্রিন, ইকোপ্রিন, জি অ্যাসপিরিন, জেনাসপ্রিন, নিওস্পিন, সলরিন ইত্যাদি। 
  • ডোজ– ট্যাবলেট ডোজেস ফর্মে অ্যাসপিরিন ৭৫ মি.গ্রা., ১০০ মি.গ্রা. এবং ৩০০ মি.গ্রা.-এর ট্যাবলেট হিসেবে পাওয়া যায়। 
  • ব্যবহার– জ্বর, মাথাব্যথা, প্রদাহ/যন্ত্রণা, অ্যাকিউট করোনারি সিন্ড্রোম, স্ট্রোক ইত্যাদি। 
  • যেভাবে কাজ করে– অ্যাসপিরিন সাইক্লোঅক্সিজিনেজ এনাজাইমের কার্যকারিতাকে বাধা দেয়– যা প্রোস্টাগ্লান্ডিন এবং থ্রম্বোক্সেন নামক হরমোন উৎপাদনের জন্য দায়ী। এভাবে অ্যাসপিরিন ব্যথানাশক, জ্বর নিবারক হিসেবে কাজ করে। 
  • সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া– গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, পাকস্থলীতে সমস্যা, এপিগ্যাস্ট্রিক অস্বস্তি ইত্যাদি।
মে-জুন ২০১৯। বর্ষ ৫। সংখ্যা ১

নক্ষত্রের দূরত্ব নির্ণয় 

জেনেটিক্সের আদ্যোপান্ত

ভিপিএন  কী এবং কেন?  

চিনে রাখি অসুখগুলি

অগ্নি নির্বাপণের কথকতা

অগ্নি নির্বাপণের কথকতা

চারদিকে বিজ্ঞান

টিআইসিআই

পৃথিবী কেন্দ্রের বয়স

ইলেকট্রোপ্লেটিং থেকে ওয়াটার হিটার

পার্কার সোলার প্রোব : সূর্যকে ছোঁয়ার মহাকাব্যিক অভিযান

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে চাঁদ

চন্দ্রাভিযান  (পর্ব-১)

পানির অপর নাম তরমুজ!

ব্ল্যাক হোলের প্রথম ছবি

অ্যাপেন্ডিক্স কি আসলেই অপ্রয়োজনীয়!

বিটকয়েনের দৌরাত্ন্য

রেডিয়েশন : অসাধারণ ত্যাগের আবিষ্কার

আবরার নাফির ফিজিক্সে রৌপ্য জয়ের গল্প

চুম্বকত্বের আদ্যোপান্ত

চিনে রাখি অসুখগুলি

দুরন্ত বাড়ন্ত e

অবলোহিত আলো দেখতে চাও?