।নুসাইর হিমাদ্রি।

আমি যুগে যুগে আসি, আসিয়াছি পুনঃ মহাবিপ্লব হেতু
এই স্রষ্টার শনি মহাকাল ধূমকেতু!

জানো অরুণ কিরণ বন্ধুরা, বিপ্লবের কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতার নানান জায়গায় নিজেকে ধূমকেতুর সাথে তুলনা করেছে। এমনকি ধূমকেতু নামে তাঁর একটি পত্রিকাও ছিলো। এখন তোমাদের কচি মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, ধূমকেতু এমন কী জিনিস-যাকে মহাপ্রতাপের উপমা হিসেবে ব্যবহার করা হয়?

ধূমকেতুর জন্ম পরিচয় কি? তার বাড়িই বা কোথায়? দাঁড়াও দাঁড়াও এতো উতলা হওয়া কিছু নেই। জানো তো, তাড়াহুড়া করা শয়তানের স্বভাব। আর শয়তান নিশ্চয় আমাদের প্রকাশ্য শত্রু। চলো ধূমকেতু সম্পর্কে কিছু খুচরো তথ্য জেনে আসা যাক। তথ্যগুলো ঝটপট মাথায় পুরে নিয়ো কিন্তু। 

সাধারণভাবে ধূমকেতু হলো এমন সৌরজাগতিক বস্তু, যা ধুলো, বরফ ও গ্যাসের দ্বারা গঠিত। এটি সূর্যের খুব নিকট দিয়ে পরিভ্রমণ করার সময় দর্শনীয় কোমা (একটি পাতলা, ক্ষণস্থায়ী বায়ুমণ্ডল) এবং কখনও লেজও প্রদর্শন করে। ধূমকেতুর নিউক্লিয়াসের উপর সূর্যরশ্মির বিকিরণ ও সৌর বায়ুর প্রভাবে এমনটি সংঘটিত হয়।

ধূমকেতুর নিউক্লিয়াস মূলত বরফ, ধূলো ও ছোট ছোট পাথুরে কণার দুর্বল সম্মেলন। ধূমকেতু প্রস্থে মাত্র কয়েকশো মিটার থেকে দশ কিলোমিটার এবং লেজের দৈর্ঘ্য কয়েকশো কিলোমিটার অবধি হতে পারে। একটি ধূমকেতুর ব্যাপ্তিকাল কয়েক বছর থেকে শুরু করে কয়েকশো বছর পর্যন্ত টিকতে পারে।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, নেপচুন গ্রহের কক্ষপথের বাহিরে কুইপার বেল্ট অঞ্চলই হলো স্বল্পকালীন ধূমকেতুদের আঁতুড়ঘর। কুইপার বেল্ট হলো সৌরজগতের মূখ্য গ্রহগুলোর (বৃহস্পতি, শুক্র, নেপচুন, মঙ্গল) বাহিরে রিং আকৃতির অঞ্চল।

অঞ্চলটি সূর্য থেকে ৩০ হতে ৫০ মহাজাগতিক একক ( ১ একক= ১৪৯,৫৯৭,৮৭০ কিলোমিটার) দূরত্বে অবস্থিত। এটি গ্রহাণু বেষ্টনির মতো হলেও তার চেয়ে ২০ গুণ প্রশস্ত এবং ২০-২০০ গুণ অধিক ভর বিশিষ্ট। আর গ্রহাণু বেষ্টনি বলতে বুঝায়- সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত, মঙ্গল ও বৃহস্পতির কক্ষপথের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত বেষ্টনি আকৃতি বিশিষ্ট সৌরজগতের অংশবিশেষ।

দীর্ঘকালীন ধূমকেতুর উৎপত্তি ‘উর্ট’ নামক মেঘ থেকে হয়। যা সৌরজগতের বাহিরে একটি বরফ আচ্ছাদিত বস্তুর গোলাকার মেঘ।

বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন গ্রহের কিবা সৌরজগতের পাশঘেঁষে চক্কর কাটা নক্ষত্রের দরুন উর্ট মেঘে যে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ক্রিয়া করে তাতে বস্তুগুলো সূর্যের অভিমুখে ছুটে যায় এবং তখনই কোমার আবির্ভাব সূচিত হয়। আমাদের দৃষ্টিতে ধরা পড়ে। কোমা ও লেজ থাকার কারণে উল্কা ও গ্রহাণু থেকে ধূমকেতু ভিন্নতর।

এপ্রিল ২০১৫- এর তথ্যানুযায়ী এ অবধি ৫,৩৮৪টি ধূমকেতু সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি। তা মূলত মূল সংখ্যার চেয়ে অতি নগণ্য। কারণ বিজ্ঞানীদের অনুমান, ধূমকেতুর প্রকৃত সংখ্যা একশ কোটিরও বেশি!

কি বন্ধুরা হাঁপিয়ে গেলে নাকি? ভারী ভারী তথ্যগুলো হজম করতে কিছুটা হাঁপিয়ে যাওয়ারই কথা। যাও একটু ঘুরে এসে আবার পড়তে বসো। একঘেয়েভাবে একটানা বসে বসে পড়ার চেয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে পড়াটা অধিক ফলদায়ক। হতে পড়া সহজেই হজম হওয়ার সুযোগ পায়।

পড়া যত বেশি হজম করতে পারবে ব্রেনের স্বাস্থ্য ততই উন্নত হবে। তোমরা কি চাও না, কিংবদন্তিদের মতো কোন মহাকাল ধূমকেতু হতে?

সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৮। বর্ষ ৪। সংখ্যা ৩

মহাশুন্যে বসবাস

মহাশূন্যে বসবাস

লেজার রশ্মির গল্প

মাইনাস ওয়ান বিড়ম্বনা!

ব্লাড গ্রুপিং বৃত্তান্ত

ব্ল্যাক বক্স কীভাবে কাজ করে?

সুপার হাইওয়ে

পিথাগোরাসের ত্রয়ী

রোজার উপকারিতা

মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ

উইন্ড টারবাইনের গল্প

মস্তিষ্ক দখল

জার্নি টু দ্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গল

জার্নি টু দ্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গল

বিপজ্জনক ভাইরাসেরা

 

ছোট ম্যাজেলানিক ক্লাউড

 

চিনে রাখি অসুখগুলি

মহাশূন্যে বসবাস