।আব্দুল্লাহ আল নোমান।

প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছো? গত সংখ্যায় আমরা কৃত্রিম উপগ্রহ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলাম। আমাদের জন্য খুশির খবর হলো এই লেখা যখন তোমরা পড়বে তখন বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে থাকার কথা। আসবো সে কথায়। তবে তার আগে চলো আজ আরও কিছু বিষয় জেনে নিই।

আপনার প্রিয় ব্যাপন ম্যাগাজিনটি সংগ্রহ করতে এখানে ক্লিক করুন

কৃত্রিম উপগ্রহ এমনভাবে পৃথিবীর চতুর্দিকে ঘূর্ণায়মান হয়, যাতে এর গতির সেন্ট্রিফিউগাল বা বহির্মুখী বেগ একে বাইরের দিকে গতি প্রদান করে – কিন্তু পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তি একে পৃথিবীর আওতার বাইরে যেতে দেয় না।

উভয় শক্তি কৃত্রিম উপগ্রহকে ভারসাম্য প্রদান করে এবং কৃত্রিম উপগ্রহটি পৃথিবীর চতুর্দিকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। যেহেতু মহাকাশে বায়ুর অস্তিত্ব নেই তাই এটি বাধাহীনভাবে পরিক্রমণ করে। কৃত্রিম উপগ্রহগুলো বৃত্তাকারে পরিক্রমণ করে না, এর গতি উপবৃত্তাকার।

চিত্র-১: কৃত্রিম উপগ্রহের কক্ষপথ 

টিভি ও বেতার সংকেত প্রেরণ এবং আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকারী কৃত্রিম উপগ্রহগুলো সাধারণত পৃথিবী থেকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে। পৃথিবী থেকে বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে তথ্য পাঠানো হয়, কৃত্রিম উপগ্রহ সেগুলো গ্রহণ করে এবং বিবর্ধিত (অ্যামপ্লিফাই) করে পৃথিবীতে প্রেরণ করে।

কৃত্রিম উপগ্রহ সিগনাল (তথ্য) গ্রহণ এবং পাঠানোর জন্য দুইটি ভিন্ন কম্পাঙ্কের তরঙ্গ ব্যবহার করে। কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে পৃথিবীতে আসা সিগনাল অনেক দুর্বল বা কম শক্তিসম্পন্ন হয়ে থাকে, তাই প্রথমে ডিস এন্টেনা ব্যবহার করে সিগনালকে কেন্দ্রীভূত করা হয় এবং পরে রিসিভার দিয়ে গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা হয়।

কৃত্রিম উপগ্রহের জ্বালানি:

কৃত্রিম উপগ্রহগুলোর উৎক্ষেপণের সময়ই পর্যাপ্ত জ্বালানি গ্রহণ করতে হয়। কারণ মহাকাশে রিফুয়েলিংয়ের কোনো সুযোগ নেই। তবে কিছু উপগ্রহ জ্বালানি হিসেবে সৌরশক্তি ব্যবহার করে। এদের গায়ে সৌরকোষ লাগানো থাকে, যা ব্যবহার করে সে সূর্য থেকে তার প্রয়োজনীয় শক্তি গ্রহণ করে।

বাংলাদেশের উপগ্রহের প্রয়োজনীয়তা:

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে টিভি চ্যানেল আছে প্রায় বিশটি।
ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বা আইএসপি আছে কয়েক’শ।
রেডিও স্টেশন আছে দশটির উপরে, আরও আসছে।
তাছাড়া ভি-স্যাট সার্ভিস তো আছেই।

এমন আরো অনেক কারণেই বাংলাদেশে স্যাটেলাইটের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে।

বিটিআরসির হিসেবে, প্রতিটি টিভি চ্যানেল স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ ডলার দিয়ে থাকে। বর্তমানে ১৯টি টিভি চ্যানেল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪০ লাখ ডলার ভাড়া দিয়ে যাচ্ছে।

এক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, টেলিফোন ও রেডিও বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়ায় ব্যবহার করে। এতে প্রতি বছর ভাড়া বাবদ বাংলাদেশকে ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার গুনতে হয়।

প্রধানত, নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলোতে স্যাটেলাইটের ব্যবহার রয়েছে:

১। মহাকাশ বা জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণা
২। আবহাওয়ার পূর্বাভাস
৩। টিভি বা রেডিও চ্যানেল, ফোন, মোবাইল ও ইন্টারনেট যোগাযোগ প্রযুক্তি
৪। নেভিগেশন বা জাহাজের ক্ষেত্রে দিক নির্দেশনা প্রদান
৫। পরিদর্শন-পরিক্রমা (সামরিক ক্ষেত্রে শত্রুর অবস্থান জানার জন্য)
৬। দূর সংবেদনশীল
৭। মাটি বা পানির নিচে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজে
৮। মহাশূন্য এক্সপ্লোরেশন
৯। ছবি তোলার কাজে, সরকারের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ
১০। হারিকেন, ঘূর্ণিঝড়, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পূর্বাভাস।
১১। আজকাল সন্ত্রাসীরা অনেক রিমোট এরিয়াতেও স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করছে
১২। গ্লোবাল পজিশনিং বা জিপিএস
১৩। গামা রে বার্স্ট ডিটেকশন করতে
১৪। পারমাণবিক বিস্ফোরণ এবং আসন্ন হামলা ছাড়াও স্থল সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য ইন্টিলিজেন্স সম্পর্কে আগাম সতর্কবার্তা পেতে
১৫। তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও বিভিন্ন খনির শনাক্তকরণ ইত্যাদিতে
১৬। ডিজিটাল ম্যাপ তৈরি করায়

উপরের বিভিন্ন কাজের জন্য অবশ্য বিভিন্ন আলাদা রকমের স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়। একটি স্যাটেলাইট দিয়েই সব কাজ হয় না। তথাপি, আমাদের মত গরিব দেশের জন্য টিভি চ্যানেল আর ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচটা সাশ্রয় করতে পারাও কম না।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট
নিজস্ব স্যাটেলাইটের পথে বাংলাদেশ

নিজস্ব স্যাটেলাইটের গুরুত্ব অনুধাবন করে প্রাথমিক কারিগরি পর্যালোচনার পর বিটিআরসি “Preparatory functions and Supervision in Launching a Communication and Broadcasting Satellite” নামের একটি প্রকল্প হাতে নেয়, যা পরবর্তীতে ২০১২ সালের ২৬শে জানুয়ারী সরকার কর্তৃক অনুমোদন দেয়া হয়।

এই প্রকল্পের প্রস্তাবনার অধীনে একটি কমিউনিকেশন এবং সম্প্রচার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা নেয়া হয় যাতে ২৪ টি Ku ( কে আন্ডার) এবং ১৬ টি C (si) ব্যান্ড ট্রান্সপন্ডার থাকবে।

চিত্র-২: শিল্পীর তুলিতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট

বাংলাদেশসহ ২৪টি দেশ নিজস্ব স্যাটেলাইট পাঠানোর চেষ্টা করছে। এখানে উল্লেখ্য যে, ভারত ১৯৭৫ সালে Aryabhata নামের উপগ্রহ পাঠায়। আর পাকিস্তান ১৯৯০ সালে Badr-1 নামের উপগ্রহ পাঠায়। বর্তমানে এই দুইটি দেশের একাধিক উপগ্রহ আছে।

এমনকি ভিয়েতনাম, ইন্দনেশিয়া, থাইল্যান্ড, নাইজেরিয়া, ফিলিপাইন, কলম্বিয়া, মউরিতাস ও কাজাখাস্তানেরও নিজস্ব উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট আছে। আরও আশ্চর্যের বিষয় হল- মায়ানমার, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়ার মত দেশও নিজস্ব স্যাটেলাইট পাঠাচ্ছে।

তাহলে আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো?

আমাদের বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট হবে একটি যোগাযোগ বা কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট। বিটিআরসি আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) এর সাথে কাজ করে যাচ্ছিলো যাতে করে ১০২ ডিগ্রী ইস্ট অরবিটাল স্লট বাংলাদেশের অধিকারে আসে, এটাই হতো বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজন স্লট।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য অনেক দেশ এ ব্যাপারে আপত্তি জানায়। কারণ, এই অরবিটাল স্লটে বাংলাদেশের উপগ্রহ স্থাপিত হলে তা ঐ মুহুর্তে সেসব দেশের উপগ্রহগুলোর জন্য অসুবিধাজনক হতো, এমনকি সেগুলোর অনেকগুলো ঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারতো।

শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ১১৯ ডিগ্রী ইস্ট অরবিটাল স্লট কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ১০২ ডিগ্রী ইস্টের কিংবা ৬৯ ডিগ্রী ইস্টের বদলে। যে কারণে বাংলাদেশ ২৭৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন টাকা খরচ করে।

সেইসাথে বাংলাদেশ ১০২ ডিগ্রী ইস্ট এবং ৬৯ ডিগ্রী ইস্ট অরবিটাল স্লট দুটো কেনারও নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যাতে করে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সিস্টেমের ভাল সার্ভিস পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ২০১৯ এবং ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধু-২ এবং বঙ্গবন্ধু-৩ স্যাটেলাইটগুলো এই দুই অরবিটাল স্লটে স্থাপিত হবে।

কিছু উল্লেখযোগ্য টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশনঃ

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটে সর্বমোট ৪০ টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর মধ্যে ২৬টি Ku ব্যান্ড এর এবং ১৬ টি C ব্যান্ড এর। একটি ট্রান্সপন্ডারের ক্যাপাসিটি হবে 36Mhz অথবা 55 mbps । যেসকল ব্যান্ড এন্টেনা ব্যবহার করা হবে এই স্যাটেলাইটে, তার মধ্যে ৩টি হবে Ku ব্যান্ড এন্টেনা এবং অপর একটি C ব্যান্ড এন্টেনা।

এর বাইরে এই ৪০ টি ট্রান্সপন্ডারের ২০টি থাকবে বাংলাদেশ এবং এর আশেপাশের কিছু অঞ্চলমুখী এবং বাকি ২০টি বাংলাদেশের বাইরের অঞ্চলের জন্য। এই স্যাটেলাইট সিস্টেমের লাইফ স্প্যান ধরা হয়েছে ১৫ বছর।

সেবাসমূহ:

প্রাথমিকভাবে বা সবচেয়ে আগে যে স্যটেলাইটটি উৎক্ষিপ্ত হবে, সেই বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট হবে একটি যোগাযোগ বা কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট, যার স্যাটেলাইট অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে ডিটিএইচ (ডাইরেক্ট টু হোম), ভিস্যাট, ব্যাকহল এবং ট্রাংকিং, নেটওয়ার্ক রিস্টোরেশন, দুর্যোগ মোকাবেলা এবং ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য যোগাযোগকে প্রাধান্য দেয়া হয়।

কাভারেজ এরিয়া:

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সিস্টেম এর প্রাইমারি সার্ভিস এরিয়া (পিএসএ) হবে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ, মেনা (Middle East and North Africa) এবং পূর্ব আফ্রিকা যা এর অরবিটাল স্লট প্রাপ্তির উপর নির্ভর করবে। বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ হবে সেই লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ।

বাণিজ্যিক সম্ভাবনা:

এক বছর মেয়াদে একটি ট্রান্সপন্ডারের ভাড়া বাণিজ্যিকভাবে বিশ্বের অন্যান্য স্যাটেলাইট সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে মিল রেখে প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে ১.২ মিলিয়ন ইউএস ডলার। একটি স্বায়ত্বশাসিত কিন্তু রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন স্যাটেলাইট কোম্পানির (বিএসসিপি) গঠন এ ব্যাপারে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

প্রাথমিকভাবে বিদেশী কারিগরি সহায়তার প্রয়োজন হলেও ২-৩ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ কোম্পানি পরিচালিত হবে দেশীয় জনবল দ্বারা। এই ফাঁকে স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের এ দুটো ব্যান্ড সম্পর্কেও জেনে নেই।

Ku-ব্যান্ড:

Ku- ব্যান্ড উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সিতে অপারেট করে (১২-১৪ গিগাহার্জ), এই ফ্রিকোয়েন্সিতে আবহাওয়, বৃষ্টি, তুষারপাত, কুয়াশাসহ নানা প্রাকৃতিক ঘটনাবলির প্রভাব বেশি থাকে। তাই ঘন বৃষ্টিপাতে এই ব্যান্ডে যোগাযোগ অথবা সিগন্যাল লেভেল খারাপ হয়ে যেতে পারে।

অটো পয়েন্টিং এন্টেনা সিস্টেম ছাড়া গ্রাউন্ড বা আর্থ স্টেশনের জন্য এই ব্যান্ডে এন্টেনা এলাইনমেন্ট সঠিক রাখা কষ্টকর। সিগন্যাল লেভেলও সাধারণত C-ব্যান্ডের থেকে বেশ কিছুটা কম থাকে। এই ব্যান্ড অধিকতর নিরাপদ, তাই মিলিটারি কমিউনিকেশনসহ গোপনীয়তার প্রয়োজন আছে এমন ব্যবস্থায় এটি বেশি গ্রহণযোগ্য।

অপেক্ষাকৃত ছোট এন্টেনা সিস্টেমে কাজ করে তাই সহজে বহনযোগ্যও হয়। আমাদের বাসাবাড়িতে টাটা স্কাই অথবা বেক্সিমকোর নতুন আনা ডিটিএইচ সংযোগে যে ক্ষুদ্রাকৃতির ডিস এন্টেনা দেখা যায়, তার সবই এই ব্যান্ডের।

C- ব্যান্ডঃ

যে কোনো ওয়েদার কন্ডিশনে বা চরম বিরূপ আবহাওয়াতেও এই ব্যান্ডের সিগন্যাল লেভেল গ্রহণযোগ্য মাত্রায় থাকে। এন্টেনা এলাইনমেন্ট এদিক সেদিক হলেও কাজ চলে যায়, এর দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কারণে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়।

এই ব্যান্ডের এন্টেনা সিস্টেমের এলএনবি এবং অল্প কিছু যন্ত্র প্রতিস্থাপিত করে Ku-ব্যান্ডের ব্যবহার একই এন্টেনায় করা যায়। তবে এনক্রিপশন মেকানিজম সম্পর্কিত কারণে এই ব্যান্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা Ku ব্যান্ড থেকে কিছুটা দূর্বল।

স্যাটেলাইটের কিছু সুবিধা:

নিজস্ব স্যাটেলাইটের সুবিধা বিস্তারিত বলা স্বল্প পরিসরে সম্ভব নয়। তবে এটা আমাদের সক্ষমতা এমনভাবে বাড়াবে যে, যেকোনো দুর্যোগে সুন্দরবনের সুন্দরী গাছের আগায় বা বান্দরবনের কোনো পাহাড়ের চূড়ায়ও নিজস্ব অবকাঠামো ব্যবহার করে সকল সুবিধাসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা সম্ভব হবে।

যেকোনো দুর্যোগে, সমরে কিংবা শান্তিতে সহজেই অন্তর্ঘাত কিংবা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পরতে পারা মাইক্রোওয়েভ বা অপটিকাল ফাইবার ব্যাকবোনের বিকল্প হিসেবে মুহুর্তেই যোগাযোগ অবকাঠামো পুনঃস্থাপন কিংবা দরকারে দেশের বা বিশ্বের নানা স্থানে যোগাযোগ অবকাঠামো স্থাপন সম্ভব করে তুলবে।

বিশেষ করে শত্রুর বিমান আক্রমণের হুমকির মুখে থাকা সামরিক যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য এবং অদূর ভবিষতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে সংযুক্ত হতে যাওয়া ইউএভি বহরের জন্য এই স্যাটেলাইট সিস্টেম হবে অপরিহার্য।

“বঙ্গবন্ধু-১” স্যাটেলাইট ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণের জন্যে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর এবং রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় গ্রাউন্ড স্টেশন বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে যে ব্যয় হবে, তা উঠে আসতে আরও বছর দশেক সময় লাগবে।

তবে এই প্রকল্প জাতি হিসেবে আমাদের অগ্রযাত্রার নতুন মাইলফলক। এটি নিজস্ব সক্ষমতাকেই কেবল বাড়াবে না, বরং এর মাধ্যমে দক্ষ এক কর্মী বাহিনীর সৃষ্টি হবে যারা এই সেক্টরে দেশের ভবিষ্যত অগ্রযাত্রায় কাজ করতে পারবে।

কর্মসংস্থান হবে হাজার হাজার লোকের এবং এদের সবাই হবে এই সংক্রান্ত নানা ব্যাপারে বিশেষভাবে দক্ষ। এর বাইরে এখন থেকে পূর্বে খরচকৃত হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা দেশেই থেকে যাবে।

এই প্রজেক্ট শেষ হলে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৫৭তম দেশ হিসাবে­ মহাশূন্যে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে।

তো প্রিয় বন্ধুরা, আগামী কোনো পর্বে অন্য কোন বিষয় নিয়ে আলোচলা করবো। ততক্ষণ আশা করি সবার বিজ্ঞান ভ্রমণ শুভ হোক।

মে-জুন ২০১৮।বর্ষ ৪।সংখ্যা ১

 

 

 

উইন্ড টারবাইনের গল্প

মস্তিষ্ক দখল

জার্নি টু দ্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গল

জার্নি টু দ্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গল

বিপজ্জনক ভাইরাসেরা

 

ছোট ম্যাজেলানিক ক্লাউড

 

চিনে রাখি অসুখগুলি

মহাশূন্যে বসবাস

বাদুড়ের অজানা অধ্যায়

শ্বাস-প্রশ্বাসের গল্প

সৌরজগতের জলাধার

ন্যানো প্রযুক্তির ঘরে

ফুটবলে বিজ্ঞানঃ টেলস্টার ১৮