।সাবরিনা সুমাইয়া।

মাটির পাতলা স্তরের আচ্ছাদন ভূপৃষ্ঠ গঠন করে। ভূ-পৃষ্ঠ মানুষ এবং পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণীর অস্তিত্বকে ধারণ করে। মাটি না থাকলে পৃথিবীতে বৃক্ষরাজির সমারোহ সম্ভব হত না আর বৃক্ষ না থাকলে প্রাণীর জীবনধারণ অসম্ভব হয়ে পড়তো।

আমাদের কৃষিনির্ভর জীবনব্যবস্থা যেমন মাটির উপর নির্ভরশীল, তেমনি এটা সত্য যে মাটিও জীবনের উপর নির্ভরশীল। মাটির সৃষ্টি এবং প্রকৃত রূপ ধরে রাখার সাথে জীবন্ত উদ্ভিদ এবং প্রাণীর গভীর সম্পর্ক রয়েছে।  জীবন সৃষ্টিতে মাটি অংশ নেয়।

আবার অপরিমেয় কাল পূর্বে মাটির সৃষ্টি হয়েছে জীব এবং জড়পদার্থের বিস্ময়কর মিথস্ক্রিয়ায়। মাটি সৃষ্টির কাঁচামাল আসে আগ্নেয়গিরির অগ্নগর্ভের স্ফুরণে প্রবাহিত লাভার স্রোত থেকে। লাভা জমে গিয়ে পাথরে পরিণত হয়। পাথরের উপর দিয়ে বা গা ঘেঁষে বয়ে যাওয়া পানির স্রোত কঠিনতম পাথর গ্রানাইটকেও নরম করে ফেলে।

তারপর তুষারপাত আর বরফের ধাক্কায় বিদীর্ণ হয় পাথর। তারপর কাজ শুরু করে জীবজগত। জীবজগতের জাদুময় সৃষ্টিনৈপুণ্যে ধীরে ধীরে এই জড়পদার্থগুলো মাটিতে রুপান্তরিত হয়।

লাইকেন পাথরকে প্রথম আবৃত করে এবং পাথরভঙ্গের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এসিড ক্ষরণ করে এবং ভাঙা পাথরে অন্যান্য জীবের বসবাসের জায়গা করে দেয়। মাটি গঠিত হয় লাইকেনের টুকরো, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পোকামাকড়ের খোসা, মৃত প্রাণীদেহের ধ্বংসাবশেষের মিশেলে। আর মাটিতে তখন গেড়ে বসে মস।

জীবেরা শুধু মাটি সৃষ্টিই করে না, অবিশ্বাস্য প্রাচুর্যের বিচিত্র সব জীব মাটিতে বাস করে। যদি তারা না থাকতো তাহলে মাটি মৃত এবং অনুর্বর হয়ে পড়তো। এই অসংখ্য জীবেরা তাদের উপস্থিতি এবং কাজকর্মের মাধ্যমে মাটিকে পৃথিবীতে সবুজের আচ্ছাদন বিনির্মাণে সক্ষম করে তোলে।

মাটি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়। এই পরিবর্তন চক্রের শুরুও নাই, শেষও নাই। পাথর ভাঙার সাথে সাথে নতুন নতুন উপাদান এতে যুক্ত হয়। জৈব বস্তু ক্ষয়িত হয়, নাইট্রোজেন এবং অন্যান্য গ্যাসীয় উপাদান আসে বৃষ্টি থেকে। কিছু উপাদান আবার জীবেরা ধার নেয় সাময়িক ব্যবহারের জন্য।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সূক্ষ্ম রাসায়নিক পরিবর্তনগুলো ঘটতে থাকে যা পানি আর বাতাস থেকে সংগৃহীত উপাদানগুলোকে রুপান্তরিত করে উদ্ভিদের ব্যবহার উপযোগী করে। এই সব পরিবর্তনে সক্রিয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে জীব উপাদানসমূহ।

কিছু কিছু গবেষণা আছে যেগুলো চমকপ্রদ। মাটিতে বাস করা জীবদেরকে তাদের নিজেদের এবং অন্যান্য জগতের সাথে একসাথে বেঁধে রাখে যে সুতা সে সম্পর্কে আমরা খুব অল্পই জানি। মাটির সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান সম্ভবত ব্যাকটেরিয়া এবং সুতার মত ছত্রাককে আশ্রয় দেয়া ক্ষুদ্র, অদৃশ্য পোষক।

তাদের আধিক্য আমাদের এক পলকে জোতির্ময় বস্তুর কথা মনে করিয়ে দেয়। ভূপৃষ্ঠের উপরের স্তরের এক চামচ মাটিতে বিলিয়ন বিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া থাকে। ক্ষুদ্রাকৃতির হওয়ার পরও এক একর উর্বর জমির সবচেয়ে উপরের স্তরের মাটিতে থাকা ব্যাকটেরিয়া পোষকের ওজন কয়েক হাজার পাউন্ড।

সুতারমতো ফিলামেন্টে জন্মানো রে (ray) ছত্রাক ব্যাকটেরিয়ার চেয়ে তুলনামূলক বড় হওয়ায় মাটিতে এদের সংখ্যা কম থাকে। কিন্তু একইপরিমাণ মাটিতে এদের ওজন সমানই থাকে। সবুজ শৈবাল মাটির ক্ষুদ্রাকার উদ্ভিদজগত তৈরি করে।

চিত্র-১: মাটিতে ব্যাকটেরিয়ার অবদান খুব বেশি

ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক আর শৈবাল হচ্ছে মাটির প্রধান ক্ষয়কারী উপাদান। এরা উদ্ভিদ ও প্রাণীকে তাদের গঠন উপাদান খনিজ লবণে পরিণত করে। রাসায়নিক উপাদান (যেমন- নাইট্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড প্রভৃতি) মাটি, বায়ু এবং জীবকোষে স্থানান্তরের বিশাল চক্র এই জীবগুলো ছাড়া সম্ভব না।

যেমন- নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী ব্যাকটেরিয়া না থাকলে উদ্ভিদ বাতাসে থাকা নাইট্রোজেন সমুদ্রে হাবুডুবু খাওয়ার পরও উদ্ভিদকে উপোস থাকতে হবে। বাতাসের আরেক উপাদান কার্বন ডাই অক্সাইড বৃষ্টির পানির সাথে মিশে কার্বনিক এসিডে পরিণত হয় যা পাথর ভাঙতে সহায়তা করে।

মাটির অন্যান্য অনুজীব জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খনিজ লবণকে (লৌহ, সালফার, ম্যাঙ্গানিজ) রুপান্তরিত করে উদ্ভিদের গ্রহণ উপযোগী করে। এছাড়াও রয়েছে বিস্ময়কর সংখ্যক মাইট (এক ধরনের পতঙ্গ) আর স্প্রিংটেইল নামের পাখাহীন আদিম পতঙ্গ।

পরমাণু আকৃতি হওয়ার পরও উদ্ভিদের ভগ্নাবশেষকে ভাঙতে এবং বনভূমির কিছু অংশের ঝরা পাতাকে মাটিতে পরিণত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কাজের জন্য কিছু কিছু অণুজীবের বিশেষীকরণ প্রায় অবিশ্বাস্য। যেমন- কিছু প্রজাতির মাইট খসে পড়া স্প্রুস গাছের নীডলেও জীবন শুরু করতে পারে।

মাইটরা নীডলে আশ্রয় নেয় এবং নীডলের অভ্যন্তরের কোষগুলোকে হজম করে ফেলে। মাইটদের বিকাশ যখন সম্পন্ন হয় তখন শুধুমাত্র নীডলের বাইরের স্তরের কোষগুলো অবশিষ্ট থাকে। বনভূমির মাটিতে থাকা কিছু পতঙ্গকে বছরের পত্রঝরার মৌসুমে বিশাল পরিমাণ উদ্ভিজ্জ কাজ করতে হয় যা সত্যি বিস্ময়কর।

এরা গাছের ঝরা পাতাকে নরম করে হজম করে ফেলে এবং পচিঁয়ে বনভূমির পৃষ্ঠের মাটিতে মিশিয়ে ফেলে। কারণ মাটিতে জীবনের আবাস তো ব্যাকটোরিয়া থেকে স্তন্যপায়ী পর্যন্ত বিস্তৃত। মাটির নিচের অন্ধকার জগতে কিছু কিছু বাসিন্দা আছে যারা স্থায়ী।

আবার কেউ কেউ শুধু শীতকালীন নিদ্রাযাপন করতেই মাটির নিচে আসে বা জীবনচক্রের নির্দিষ্ট কিছু সময় মাটির নিচে ব্যয় করে। কেউ আবার মাটির নিচের গর্ত থেকে ইচ্ছামত মাটির উপরের জগতে যাওয়া-আসা করতে পারে। মাটিতে এই বিচিত্র সব জীবের বিচিত্ররকম আবাস আসলে মাটিতে ছিদ্র তৈরি করে এবং মাটিতে উদ্ভিদের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় পানি এবং বাতাস সহজলভ্য করে।

অপেক্ষাকৃত বড় আকৃতির মৃত্তিকা বাসী জীবদের মধ্যে কেঁচোর মত গুরুত্বপূর্ণ কেউ নয়। চার্লস ডারউইন তার ‘Formation of vegetable mould, thrugh the action of wors, with observations on their habits’ গ্রন্থের মাধ্যমে প্রথম পৃথিবীবাসী জানতে পারে মাটি পরিবহনে ভূতাত্ত্বিক কর্মী হিসেবে কেঁচোর মৌলিক ভূমিকার কথা।

ভূপৃষ্ঠের পাথরগুলো ধীরে ধীরে যে মাটি দিয়ে আবৃত হয়, সে মাটি কেঁচোই বয়ে আনে। অনুকূল এলাকায় এই বহনকৃত মাটির পরিমাণ কয়েক টন পর্যন্ত হতে পারে। একইসাথে ঘাস, পাতা প্রভৃতি গর্তে নিয়ে গিয়ে মাটিতে মিশিয়ে ফেলার কাজটিও তারা করে।

ডারউইনের হিসেবমতে, কেঁচোর পরিশ্রমের ফলে মাটিতে নতুন স্তর যুক্ত হয়। এক ইঞ্চি করে বাড়তে বাড়তে দশ বছরে এটা অনেক পুরু হয়ে যায়। কেঁচোর গর্ত মাটিতে বাতাস প্রবেশ করতে, পানি পেতে এবং উদ্ভিদের শেকড়কে মাটি ভেদ করতে সাহায্য করে।

কেঁচো মাটির ব্যাকটেরিয়াদের নাইট্রোজেন সংবন্ধন ক্ষমতা বাড়ায় এবং মাটির পচন হ্রাস করে। জৈব পদার্থ কেঁচোর পরিপাকতন্ত্রে হজম হয় এবং এর বর্জ্যপদার্থের নিষ্কাশন মাটির উর্বরতা বাড়ায়।

মাটিতে বসবাসকারী এই জীব সম্প্রদায় জালের মত ছড়িয়ে আছে। এরা নানাভাবে একে অন্যের সাথে সম্পর্কিত। অন্যদিকে, মাটি পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। মাটি ততক্ষণই জীবন্ত থাকবে যতক্ষণ মাটিবাসী জীবেরা বেঁচে থাকবে।

এখন দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে, কি ঘটতে পারে মাটির এই অসংখ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ জীবদের যখন তাদের জগতে বিষাক্ত রাসায়নিকের অনুপ্রবেশ ঘটে? এই বিষ হতে পারে সরাসরি মাটিতে প্রয়োগ করা রাসায়নিক সার বা বৃষ্টির পানির সাথে বিষাক্ত গ্যাসের মিশ্রণ যা বনভূমি, আবাদি জমিতে পড়ে।

তাহলে, এটি কি সম্ভব যে কীটনাশক শুধু শষ্যের শত্রু পোকামাকড়ের লার্ভাকে মারবে কিন্তু উপকারী পোকামাকড়গুলোর কোন ক্ষতি করবে না? অথবা এমন কোন ছত্রাকনাশক যা ক্ষতিকর ছত্রাকদের ধ্বসিয়ে দেবে অনেক গাছের শিকড়ে বাস করা বন্ধু ছত্রাকদের কোন ক্ষতি করা ছাড়াই?

সত্যি কথা বলতে, মাটির বাস্ততন্ত্র খুব গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিজ্ঞানীদের কাছে ব্যাপারটা যথেষ্ট অবহেলিত থেকে গেছে। পোকামাকড়ের রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ কৌশলের ব্যাপারটি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যেন আমরা পোকা নিধনযজ্ঞে যত ইচ্ছা তত কীটনাশক প্রয়োগ করবো আর মাটি এই সব অপমান কোনরকম প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে মুখবুজে হজম করবে।

মাটির জগতটাকে সবসময় অবহেলা করা হয়েছে। তারপরও যে অল্পকিছু গবেষণা হয়েছে তা থেকে মাটির উপর কীটনাশক প্রয়োগের প্রভাব সম্পর্কে অনেকটা ধারণা পাওয়া গেছে। যদিও সেসব গবেষণার ফলাফল সব মাটির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় কারণ অনেকরকম মাটি রয়েছে।

কোন মাটিতে হয়ত কীটনাশক প্রয়োগে অনেক ক্ষতি হচ্ছে সেখানে অন্য কোন মাটিতে ততটা ক্ষতি হচ্ছে না। হালকা বেলেমাটিকে এক্ষেত্রে প্রচুর হিউমাসযুক্ত উর্বর মাটির তুলনায় অনেক বেশি ভুগতে হয়।  

একসাথে অনেক কীটনাশক প্রয়োগ করলে একটা কীটনাশক প্রয়োগের চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে মাটির কেন্দ্রস্থলের জীবজগতের রাসায়নিক পরিবর্তনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মাটিতে নাইট্রোজেন সংবন্ধন প্রক্রিয়ার কথা যা নাইট্রোজেনকে উদ্ভিদের জন্য সহজলভ্য করে।

কীটনাশক 2, 4-D নাইট্রোজেন সংবন্ধন প্রক্রিয়াকে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্থ করে। ফ্লোরিডায় এক গবেষণায় দেখা গেছে, লিনডেন, হপ্টাক্লোর, বেনজিনহেক্সা ক্লোরাইড প্রয়োগের দুই সপ্তাহ পর মাটিতে নাইট্রোজেন সংবন্ধন কমে গেছে।

অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, BHC, DDT, অলড্রিন, লিনডেন প্রভৃতি লিগিউমযুক্ত উদ্ভিদের মূলে নাইট্রোজেন সংবন্ধন হতে দিচ্ছে না। উন্নত উদ্ভিদের শিকড় এবং ছত্রাকের এক রহস্যময় কিন্তু উপকারী বন্ধনকে বিপন্ন করছে।

কখনো দেখা যায় মাটিতে অনুজীব হঠাৎ অনেক বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে আবার হঠাৎ কীটনাশকের প্রভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এই পরিবর্তন খাদক এবং শিকারের সম্পর্ককে ভারসাম্যহীন করে ফেলে যা মাটির বিপাকীয় কার্যক্রমে পরিবর্তন নিয়ে আসে। ফলে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায়।

আরেকটি চিন্তার ব্যাপার হচ্ছে, কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া অনেক দীর্ঘস্থায়ী হয়। বছরের পর বছর পরেও হয়ত মাটি পূর্বের উৎপাদনশীল মাটিতে পরিণত হতে পারে না। এইভাবে কীটনাশকের ব্যবহার চলতে থাকলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় পৃথিবীর মানবসমাজের জন্য ভবিষ্যতে অনেক বিপদ অপেক্ষা করছে। মানব সমাজের সুখের বার্তা লুকিয়ে আছে মাটির সঠিক ব্যবহারের মাঝে।

তাই, আমাদের উচিত জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হওয়া। এতে মাটির স্বাভাবিক রুপ বজায় থাকবে, মাটি উর্বর থাকবে। ফলে গাছপালার সবুজে এবং ফসলের প্রাচুর্য্যে পৃথিবী হবে সুখী ও সুন্দর।

 

তথ্যসূত্র:
র‍্যাচেল কারসনের ‘The silent spring’ গ্রন্থের ‘In the realm of soil’ এর ভাবানুবাদ।
মার্চ-এপ্রিল ২০১৯। বর্ষ ৪। সংখ্যা ৬

তোমাদের প্রশ্ন আমাদের উত্তর

কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন

সহজে মিলাও সুডোকু

ফোটোনিক্স ও গবেষণা

মস্তিষ্ক দখল

ইভিএম কীভাবে কাজ করে?

পৃথিবীর বিপদ যত!

ইউরেনিয়াম: অবিশ্বাস্য শক্তির ভ্রুণ

একটি গ্রহ ও দুটি নিঃসঙ্গ কোটর

মহাশূন্যে বসবাস

চিনে রাখি অসুখগুলি

শুন্যে আমি

চুম্বকত্বের আদ্যপান্ত

অগ্রগতির যুগে চিকিৎসা বিজ্ঞান

মস্তিষ্ক দখল

অনুভূতির রহস্যে!

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

কার্বন ডেটিংয়ের জাদু

চিনে রাখি অসুখগুলি

মস্তিষ্ক দখল

পরমাণু থেকে কণার জগতে